পায়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ ৫ পেল তামান্না

adminadmin
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৬:৫৭ AM, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

অনলাইন ডেস্ক: অদম্য মেধাবী তামান্না। শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত ও একটি পা নেই। তবুও এ নিয়ে হতাশ হয়নি এই শিক্ষার্থী। পা দিয়ে লিখে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে তামান্না আক্তার নুরা। পেয়েছে জিপিএ ৫। এর আগে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতেও জিপিএ ৫ পেয়েছিল সে। অদম্য মেধাবী তামান্নার এক পা-ই সম্বল। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত ও একটি পা নেই। জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করে পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে এইচএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করলে তামান্নার এ কৃতিত্ব প্রকাশ পায়। সে যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল। তামান্নার গ্রামের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে।
তামান্নার বাবার নাম রওশন আলী। মায়ের নাম খাদিজা পারভীন শিল্পী। বাবা স্থানীয় ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদ্রাসার (নন-এমপিও) বিএসসি শিক্ষক। মা গৃহিণী। তিন সন্তানের মধ্যে তামান্না সবার বড়।

তামান্নার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অনটনে সেটি এখন থেমে যাওয়ার উপক্রম। স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও লিখেছে সে।

তামান্না জানায়, ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু জানতে পেরেছি শারীরিক ডিস অ্যাবিলিটির জন্য ডাক্তারি পড়া যাবে না। সে জন্য আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস ক্যাডার হতে চাই। প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করতে চাই।

তামান্নার বাবা রওশন আলী জানান, করোনাকালে সবাই যখন আড্ডা দিয়েছে, তামান্না তখন ঘরে বসে পড়াশোনা করেছে। মেয়ের ফলাফলে আমরা খুবই আনন্দিত। আশা করি, কোনো কোটা ছাড়াই তামান্না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে।

বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুর রহমান বলেন, তামান্না আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী। তার মেধার প্রশংসা আমাদের কলেজ শিক্ষকরা প্রায়ই করেন। তামান্না জন্মপ্রতিবন্ধী হয়েও নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করেছে, দেখিয়ে দিয়েছে সমাজকে। শুধু পড়াশোনা নয়, তামান্না ভালো ছবিও আঁকে। এমনকি কম্পিউটার প্রযুক্তিতেও সে দক্ষ। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত ও একটা পা নেই। অথচ একটা পা দিয়েই তামান্নার যুদ্ধ চলছে। আমি আশা রাখি সে ভবিষ্যতে অনেক ভালো কিছু করবে। তবে তার এখন সবচেয়ে বেশি দরকার সহযোগিতা। সরকার বা বিত্তশালীরা হাত বাড়িয়ে দিলে অনেক দূর যাবে তামান্না- এটা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি।

আপনার মতামত লিখুন :